গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি.: উত্তরাঞ্চলের সর্ববৃহত বিল হলো চলনবিল। নাটোরের গুরুদাসপুরের উপর দিয়ে প্রবাহিত আত্রাই ও নন্দকুঁজা নদী এবং তার শাখা প্রশাখা দিয়ে চলনবিলে পানি প্রবেশ করে। উজান থেকে নেমে আসা পানির কারণে বেড়েছে চলনবিলের পানি।
নাটোর, সিরাজগঞ্জ ও পাবনা জেলার কিছু অংশ নিয়ে গঠিত এই বৃহৎ চলনবিল। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রতিদিনই প্লাবিত হচ্ছে চলনবিলের নিম্নাঞ্চলসহ নতুন নতুন এলাকা। যার ফলে বিলপাড়ের মানুষের পারাপার ও মাছ ধরার প্রধান মাধ্যম ডিঙি নৌকার চাহিদা বাড়ছে। বাড়ছে ডিঙি নৌকা তৈরি ও কেনার চাহিদা। গতকাল শনিবার (১৯ আগস্ট) সকালে সরেজমিনে চলনবিলাঞ্চলের অন্যতম বৃহৎ চাঁচকৈড় নৌকার হাট ঘুরে দেখা যায়, বর্ষা মৌসুমেকে ঘিরে নৌকা তৈরিতে ব্যস্তসময় পার করছেন কারিগররা। হাটের দক্ষিণ পাশের্^র কারখানাগুলোতে চলছে ডিঙি নৌকা তৈরির কাজ। বিক্রির জন্য কারখানার সামনে থরে থরে সাজিয়ে রাখা হয়েছে ডিঙি নৌকা। সপ্তাহের দু’দিন শনি ও মঙ্গলবার এ হাটে বিক্রি হয় শত শত নৌকা। নৌকা কেনাবেচায় ব্যবসায়ী, কারিগর ও ক্রেতার হাঁকডাকে মুখরিত নৌকাহাটি। নৌকা ক্রয়ে সুফল পাচ্ছেন পানিবন্দি মানুষ। বর্ষা মৌসুমে বিলপাড়ের কর্মহীন কৃষক ও জেলেদের মাছ ধরার প্রধান উপকরণ হলো ডিঙি নৌকা। আর এই নৌকা তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন অনেক কাঠমিস্ত্রি। নৌকাক্রেতা পার্শ্ববর্তী তাড়াশ উপজেলার কুন্দইল গ্রামের মজনু, নাদোসৈয়দপুর গ্রামের আহাদ আলীসহ আরো অনেকে বলেন, তারা বিলপাড়ের কৃষক মানুষ। বর্ষা মৌসুমে তাদের হাতে কাজ থাকে না। আবার এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাতায়াত করতে হয় নৌকায়। মাছ ধরে বাড়তি আয় ও পারাপারের জন্যই তারা ডিঙি নৌকা কিনতে এসেছেন। চলনবিলে পানি বৃদ্ধির কারনে একটু বেশি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে নৌকা। চাঁচকৈড় হাটের ডিঙি নৌকা তৈরি কারিগর আলাউদ্দিন, বকুল হোসেন, আমির হোসেনসহ আরোও অনেকে জানান, বর্ষা মৌসুমে ডিঙি নৌকা তৈরি করে চলে তাদের সংসার। কাঠের প্রকারভেদে নৌকার দাম কমবেশি হয়ে থাকে। ১২ থেকে ১৫ হাত নৌকা তৈরিতে খরচ হয় ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা। ১০ থেকে ১২ হাত নৌকা তৈরি করতে খরচ হয় আড়াই হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা। প্রতিটি নৌকা ৫০০ টাকা লাভে তারা বিক্রি করছেন। নৌকা ব্যবসায়ী শিবলু ফকির জানান, উজানের পানি বর্তমানে চলনবিলে প্রবেশ করতে শুরু হয়েছে। সব এলাকা এখনও প্লাবিত হয়নি। ফলে নৌকার চাহিদা কম থাকলেও পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে ডিঙি নৌকার চাহিদা বাড়ছে। গত বছরের তুলনায় বর্তমানে শ্রমিক, কাঠ ও নৌকা তৈরির প্লেনশিটের দাম বেশি হওয়ায় নৌকা তৈরিতে খরচ বেশি হচ্ছে।# মোঃ মেহেদী হাসান ০১৭১৩-৭৪৯১৫৭