শস্য রপ্তানিতে রাশিয়া-ইউক্রেন চুক্তি সই

কৃষ্ণ সাগরের বন্দরগুলো দিয়ে শস্য রপ্তানি ফের চালু করতে চুক্তি করেছে রাশিয়া ও ইউক্রেন। গতকাল শুক্রবার ইস্তাম্বুলে তুরস্ক ও জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় বহুল প্রত্যাশিত এই চুক্তি সই হয়েছে। এর ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে শস্য সরবরাহে সাম্প্রতিক সংকট কাটবে বলে আশা করা হচ্ছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইস্তাম্বুলে এক অনুষ্ঠানে রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু এবং ইউক্রেনের অবকাঠামোমন্ত্রী ওলেক্সান্ডার কুব্রাকভ পৃথকভাবে জাতিসংঘ ও তুর্কি কর্মকর্তাদের সঙ্গে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন। ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা বলেছেন, যুদ্ধের কারণে রাশিয়ার সঙ্গে একই নথিতে তারা স্বাক্ষর করবে না। ফলে চুক্তিতে দুটি দেশ পৃথকভাবে স্বাক্ষর করে। ইউক্রেন বলেছে, তারা শস্য রপ্তানির বিষয়ে রাশিয়ার সঙ্গে কোনো চুক্তি করেনি, করেছে জাতিসংঘের সঙ্গে। তারা আরও জানিয়েছে, চুক্তির অন্যতম শর্ত হলো, জাহাজগুলোতে যখন তল্লাশি চালানো হবে, সেটি যেন তুরস্কের জলসীমায় হয়। ইউক্রেনে রুশ আক্রমণের পর বন্ধ হয়ে যাওয়া কৃষ্ণ সাগর দিয়ে খাদ্যশস্য রপ্তানি আগস্টের মাঝামাঝিতে পুনরায় শুরু হতে পারে বলে প্রত্যাশা করছেন কূটনীতিকরা। এদিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান এবং জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। চুক্তির পর জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, আজ কৃষ্ণ সাগরে একটি আশার আলো, সম্ভাবনার আলো দেখা যাচ্ছে। এর ফলে দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে থাকা উন্নয়নশীল দেশগুলোতে কিছুটা স্বস্তি আসবে। জাতিসংঘের ধারণা, যুদ্ধের কারণে বিশ্বের আরও ৪ কোটি ৭০ লাখ মানুষ চরম অনাহারের মুখে রয়েছে। যুদ্ধরত দুই দেশকে চুক্তিতে রাজি করাতে সহযোগিতায় করায় তুরস্কের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান গুতেরেস। তিনি আরও বলেন, এই প্রক্রিয়ার প্রতিটি পদক্ষেপে আঙ্কারার ভূমিকা ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জাতিসংঘ প্রধান জানান, এই চুক্তি ইউক্রেনের তিনটি প্রধান বন্দর- ওডেসা, চেরনোমর্স্ক এবং ইউঝনি দিয়ে বিপুল পরিমাণ খাদ্যশস্য রপ্তানির দুয়ার খুলে দিয়েছে। চুক্তি ঠিকভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে কি না তা পর্যবেক্ষণে জাতিসংঘ একটি সমন্বয় কেন্দ্র খুলবে বলেও জানান তিনি। এদিকে, এই চুক্তি বিশ্বের কোটি কোটি মানুষকে দুর্ভিক্ষের মুখে পড়া থেকে বাঁচাবে বলে জানিয়েছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *