রাজশাহীর জনসভায় শিমুল এমপির সর্ববৃহৎ মিছিল নিয়ে যোগদান

 

 

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
প্রাণের উচ্ছাস ও আনন্দ নিয়ে নাটোর থেকে বিশেষ ট্রেন, বাস, লেগুনা, ট্রাকে রাজশাহীতে প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার জনসভায় গেলেন দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। শুধুমাত্র ট্রেন যোগেই রাজশাহীতে গেছেন প্রায় ১০ হাজার নেতাকর্মী ও সমর্থক। স্থাানীয় সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল এই বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থাা করেন। রোববার (২৯ জানুয়ারি) সকাল ১০ টা ৩৫ মিনিটে নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার বীরকুৎসা রেলওয়ে স্টেশন থেকে বিশেষ ট্রেনটি যাত্রা শুরু করে। এই স্টেশনেই খাজুরা ইউনিয়নের প্রায় এক হাজার নেতাকর্মী ট্রেনে ওঠেন। পর্যায়ক্রমে মাধনগর, নলডাঙ্গা বাসুদেবপুর স্টেশন থেকেও বিশেষ ট্রেনে উঠেন বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী । নাটোর স্টেশনে পৌঁছার আগেই ট্রেনটি ভরে যায়। দুপুর পৌনে ১ টার সময় বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী নিয়ে রাজশাহী রেল স্টেশনে পৌছায় ট্রেনটি। নাটোর-২ ( সদর নলডাঙ্গা) আসনের সংসদ সদস্যের ব্যক্তিগত সহকারি ( পিএস) মোঃ আকরামুল ইসলাম জানান, রাজশাহীতে প্রধানমন্ত্রীর জনসভা সফল করতে দলীয় নেতাকর্মীদের জন্য বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থাা করেছেন সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল। নাটোর ও নলডাঙ্গা উপজেলার ছয়টি রেলওয়ে স্টেশন থেকে প্রায় দশ হাজার নেতাকর্মী ট্রেনে উঠেছেন। এর মধ্যে বীরকুৎসা স্টেশনে ১২০০ জন, মাধনগর স্টেশনে ১৫০০ জন, নলডাঙ্গায় ১৫০০ জন, বাসুদেবপুর স্টেশনে ১৫০০ জন, নাটোর স্টেশনে ৩০০০ জন ও ইয়াসিনপুর স্টেশনে ১৫০০ জন ট্রেনে উঠেছেন। সেখানকার নেতা কর্মীদের সংখ্যা সনাক্ত করতে ওই সমপরিমাণের চেয়েও বেশি পরিমান ক্যাপ, গেঞ্জি ও খাবার বিতরণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, দলীয় নেতা কর্মীদের জন্য সাতটি বগি ভাড়া করা হয়েছে। এমনকি রেল কর্তৃপক্ষের কাছে আরও অতিরিক্ত ভাড়াও পরিশোধ করা হয়েছে। ট্রেন, বাস, লেগুনা ও ট্রাক মিলে শফিকুল ইসলাম শিমুল এমপির নেতৃত্বে প্রায় ২৫ হাজার নেতা কর্মী রাজশাহীর জনসভায় যোগদান করেন। ইতোমধ্যে নেতাকর্মীরা রাজশাহীতে পৌঁছে গেছেন। রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় যাত্রী পরিবহনের জন্য নাটোর-২ আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলের পক্ষ থেকে রেলের কাছে ভাড়ার বিনিময়ে বিশেষ ট্রেনের জন্য আবেদন করা হয়েছিল। ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে রেল কর্তৃপক্ষ ১ লাখ ২৪ হাজার ৩২৪ টাকায় একটি বিশেষ ট্রেন বরাদ্দ দেয়। এতে রেল কর্তৃপক্ষ নাটোর স্টেশন থেকে ট্রেনটি ছাড়ার কাগজপত্র পাঠায়। সে অনুযায়ী ওই ট্রেনটি যথারীতি সকাল ৯ টায় নাটোর স্টেশনে এসে পৌঁছায়। এ খবরে জেলার নলডাঙ্গা উপজেলার আরো চারটি রেলওয়ে স্টেশনে অপেক্ষমান হাজার হাজার নেতকর্মী হতাশ হয়ে পড়েন। বিষয়টি জানার পর সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল রেলমন্ত্রী, রেল সচিব ও রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের মহা ব্যবস্থাাপকের সঙ্গে যোগাযোগ করে অনুরোধ করেন। তার অনুরোধের প্রেক্ষিতে এবং আরো অতিরিক্ত ৭৩ হাজার ৫০০ টাকা ভাড়া দেওয়া শর্তে বীরকুৎসা স্টেশন থেকে ট্রেন ছাড়ার ব্যবস্থাা করেন। সকাল সাড়ে ৯ টায় সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল নিজেই ট্রেনে চেপে বীরকুৎসা স্টেশনে যান। সেখান থেকে দলীয় নেতাকারী কর্মীদের নিয়ে রাজশাহীর উদ্দেশ্যে রওনা দেন। পথে মাধনগর, নলডাঙ্গা, বাসুদেবপুর, নাটোর ও ইয়াসিনপুর স্টেশন থেকে হাজার হাজার নেতাকর্মী ট্রেনটিতে উঠেন । তবে ট্রেনের ভেতরে জায়গা না পেয়ে অনেকে দাঁড়িয়ে, ট্রেনের ইঞ্জিনে ও ছাদে উঠে যাত্রা করেন। পুরো ট্রেনে তিল ধারণের ঠাই ছিল না । এরপরেও নেতাকর্মীরা আনন্দ উল্লাসে মেতে ওঠেন। ঢাকা রাজশাহী রুটে চলাচলকারী আন্তঃনগর সিল্ক সিটি ট্রেনটি সাপ্তাহিক বন্ধ থাকায় ওই ট্রেনটি বিশেষ ট্রেন হিসেবে চলাচল করছে। এদিকে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ট্রেনটিতে নির্ধারিত আসনের চেয়ে প্রায় আটগুন যাত্রী উঠেছে।

আসন না পেয়ে অধিকাংশ মানুষ দাঁড়িয়ে, দরজার হাতলে ঝুলিয়ে, রেলের ইঞ্জিনে ও ছাদে করে যেতে দেখা গেছে। এমন পরিস্থিাতিতেও নেতাকর্মীদের মধ্যে কোন ভয়-ভীতি নয় বরং উচ্ছাস আর আনন্দ করতে দেখা গেছে। গায়ে একই রংয়ের গেঞ্জি আর মাথায় ক্যাপ এবং হাতে খাবারের ব্যাগ নিয়ে উল্লাস আর শ্লোগানে শ্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে পুরো ট্রেন। ট্রেনে অবস্থাানরত যুবলীগ নেতা সুইট সরদার, মহিলা নেত্রী আঞ্জুয়ারা রত্না, রেনুকা হুজুর জানান, ট্রেনে বসার জায়গা নেই, দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে যেতে হচ্ছে অনেককে। তারপর কারো মধ্যে ক্লান্তি বা বিরক্তবোধ নেই। বরং দীর্ঘদিন পর প্রিয় নেত্রীর জনসভায় যেতে পারছেন এটাই তাদের বড় আনন্দ। ষাটোর্ধ বয়সী আওয়ামীলীগ কর্মী বাহার উদ্দিন, সাইফুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন নেত্রীকে দেখা হয়নি, সামনাসামনি কোন ভাষণ শোনা হয়নি। এবার সুযোগটা পেয়েছেন তাই তারা রাজশাহীতে যাচ্ছেন। তার ওপর ট্রেন যাত্রা আরো মজার। এছাড়া এক সঙ্গে অনেক নেতাকর্মী জনসভায় যাওয়াটাও অনেক আনন্দের। একই কথা জানালেন আরো অনেকে। নাটোর স্টেশনে কর্মরত স্টেশন মাস্টার অশোক চক্রবর্তী জানান, সাপ্তাহিক বন্ধ থাকায় রাজশাহী ঢাকা রুটে চলাচলকারী সিল্ক সিটি ট্রেনটি বিশেষ ট্রেন হিসেবে দেওয়া হয়েছে । এ ট্রেনের আসন সংখ্যা ৭৩৫ টি। এ হিসেবে নাটোর-রাজশাহী রুটে ভাড়া নির্ধারণ করে তার কাছে এক লাখ ২৪ হাজার ৩২৪ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। পরবর্তীতে স্থাানীয় সংসদ সদস্যের অনুরোধে মাধনগর স্টেশন পর্যন্ত ট্রেনটি যাওয়ার অনুমতি পেলে আরো ৭৩ হাজার ৫০০ টাকা ভাড়া নির্ধারণ করা হয়। পরে নির্ধারিত ওই টাকাসহ ১ লাখ ৯৭ হাজার ৮২৪ টাকা রেলের ট্রেজারিতে জমা দিয়েছেন। তিনি বলেন, বিশেষ ট্রেনটি চলাচলের কারণে অন্যান্য ট্রেন চলাচলের সময়সূচিতে তেমন কোন প্রভাব পড়েনি। এমনকি কোন ট্রেনেরই সিডিউল বিপর্যয় ঘটেনি। বিশেষ ট্রেনটি রাজশাহী থেকে সন্ধ্যা ছয়টার সময় নাটোরের উদ্দেশ্যে রওনা দিবে জানান তিনি। নাটোর-২ (সদর নলডাঙ্গা) আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল জানান, রাজশাহীতে প্রধানমন্ত্রীর জনসভা সফল করতে তার নেতৃত্বে ২৫ থেকে ৩০ হাজার নেতাকর্মী ট্রেন ছাড়াও বাস, ট্রাক, লেগুনায় করে পৌছেছেন। দলের নেতাকর্মীদের যাতায়াতের জন্য ট্রেনের ৭ বগি ভাড়া নিয়ে ১ লাখ ৯৭ হাজার ৮২৪ টাকা পরিশোধ করেছেন। এমনকি রেল কর্তৃপক্ষের কাছে অতিরিক্ত ভাড়াও পরিশোধ করেছন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *