এর আগে তামিম ইকবালও কেমার রোচের সুইং করে বেরিয়ে যাওয়া বলে ব্যাট চালিয়ে উইকেটকিপারে জশুয়া দা সিলভার গ্লাভসে ধরা পড়েছেন। রোচের কি সৌভাগ্য, প্রিয় শিকার তামিমকে ফিরিয়েই টেস্টে ২৫০তম উইকেট পাওয়ার উৎসব করলেন! প্রিয় শিকার কারণ, এ নিয়ে তিনি তামিমকে আউট করলেন ১২ বার।না, বাংলাদেশের ব্যাটিং নিয়েও আর বেশি ভাবা যাচ্ছে না। এ রকম সব আউট একবার সরাসরি দেখার পর একই দিনে দ্বিতীয়বার কল্পনায় ভাসিয়ে তোলাটা নিজের জন্যও একটা শাস্তি। আর বাংলাদেশ দল তো গত দুই-তিন সিরিজেই ব্যাটিং করছে মেজাজ ‘হাই’ হয়ে যাওয়ার মতো। স্মৃতির টেলিভিশনে সেই ব্যাটিংয়ের পুনঃপ্রচার দেখে মনকে অশান্ত করে তোলার কোনো অর্থ হয় না।তারওপর সেদিন দলের প্রশিক্ষক শ্রেণির একজন হতাশ হয়ে বলছিলেন, তিনি নিজেও নাকি ধরতে পারছেন না ব্যাটসম্যানদের রোগটা কোথায়। বেশি দুশ্চিন্তা তরুণ ব্যাটসম্যানদের নিয়ে। অভিজ্ঞরা খারাপ সময়ে পড়ে আবার সেটা থেকে বেরিয়ে আসার পথটা চেনেন। কিন্তু এই পর্যায়ে এসে তরুণেরা এখনো সেই উত্থান-পতনটা দেখেননি। তাদের এই চক্কর থেকে বের করে আনাটাই বেশি কঠিন মনে হচ্ছে তাঁর কাছে। তো ডাক্তারই যখন রোগীর অবস্থা দেখে এ রকম টেনশনে পড়ে যান, আমাদের মতো দর্শনার্থীর আর কি করার আছে! এর চেয়ে অন্য চিন্তা করা যাক।
কাল বারবার বৃষ্টি এসে বাংলাদেশকে তিন দিনে হারা থেকে বাঁচিয়ে দিলেও আজ চতুর্থ দিনে নিশ্চিত রেহাই নেই। এসব ক্ষেত্রে টেস্টের পড়ে থাকা দিনগুলোতে সিরিজ কাভার করতে আসা সাংবাদিকেরা পড়ে যান সংকটে। না থাকবে খেলা, না থাকবে খেলোয়াড়দের মন কথা বলার মেজাজে, না থাকবে লেখার বিষয়। হ্যাঁ, ব্যাটিংটাকে কাটাছেঁড়া করে কত কিছুই লেখা যায়, কিন্তু সেটারও তো একটা সীমা আছে। প্রতিদিন ব্যাটিং ভালো হবে না আর প্রতিদিনই কাটাছেঁড়া করে মস্তিষ্কে রক্তারক্তি অবস্থা—এ আর কত! সেন্ট লুসিয়া টেস্টের সম্ভাব্য ফাঁকা পঞ্চম দিনের চিন্তাটাও তাই তৃতীয় দিন বিকেলেই হানা দিল। আশার কথা, টি-টোয়েন্টি দলের বাকি ক্রিকেটাররা এরই মধ্যে দলের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। মঙ্গলবার সকালে বাংলাদেশ এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ দুই দল একই ভাড়া করা ফেরিতে সমুদ্রপথে ডোমিনিকা যাবে। তার আগের দিন সেন্ট লুসিয়ায় একদিনের বাড়তি অনুশীলনের সুযোগ নিশ্চয়ই নিতে চাইবে দল। সাদা বলের অনুশীলনের সুযোগে টেস্টের হতাশা থেকে যদি সফরের মুখটা টি-টোয়েন্টির বন্দরের দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া যায়, মন্দ কি!কিন্তু সে উপায়ও কি রেখেছে বাংলাদেশ দল? সর্বশেষ ১০টি টি-টোয়েন্টির নয়টিতেই হার। আশার জাল যে বুনবেন, সে সুতোই তো নেই! আর এই সব ম্যাচেও ব্যাটিংটা হয়েছে হতাশার। ও, ঘুরেফিরে আবার সেদিকেই… ব্যাটিং!আসলে তিন দিনে না হারা টেস্টের তৃতীয় দিনের শেষটা যখন চতুর্থ দিনের জন্য শুধু শেষের আনুষ্ঠানিকতাই বাকি রাখে এবং সেটার জন্য কাঠগড়ায় দাঁড়ায় বাজে ব্যাটিং, তখন এই আলোচনা এড়িয়ে যাওয়ার আর উপায় থাকে না। ব্যাটিংয়ের সমস্যার সমাধান ভালো করার চেষ্টায়, ভালো কিছুর ইচ্ছায়, ভালোভাবে খেলায়। ড্রেসিংরুমে কোচরাও নিশ্চয়ই এই কথাটাই সবার আগে বলবেন ব্যাটসম্যানদের, ‘চিন্তাটাকে উন্নত কর… থিংক হাই।’তবে সেটি অবশ্যই ওবিইর ফেলে আসা জীবনের প্রক্রিয়ায় নয়।