বাগাতিপাড়ায় লেবুর কেজি ৫ টাকা

বাগাতিপাড়া প্রতিনিধিঃ
হালিতে বিক্রি হওয়া লেবু এখন বিক্রি হচ্ছে কেজির ওজনে। এক কেজি লেবুর খুচরা মূল্য ৫ টাকা। গত এক সপ্তাহ ধরে নাটোরের বাগাতিপাড়ার তমালতলাসহ আশে-পাশের কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। আমদানী বেশি হওয়ায় বাজারে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন। গতকাল সোমবার তমালতলা হাটে লেবু বিক্রি করতে এসেছিলেন পার্শ্ববর্তী বেগুনিয়া গ্রামের মকবুল হোসেন। তিনি জানালেন, চলতি মওসুমে তার বাগানে বেশ লেবু ধরেছে। লেবু উত্তোলন করে আড়তে বিক্রি করতে গিয়েছিলেন। প্রতি কেজি দুই টাকা দাম উঠায় সেখানে বিক্রি করেননি। পরে তমালতলা হাটে প্রতি কেজি মাত্র ৫ টাকা দরে দুই মণ লেবু ৪০০ টাকায় বিক্রি করেছেন। প্রতি কেজিতে প্রায় ২০ থেকে ২৫ টি লেবু ধরেছে। এতে প্রতি লেবুর দাম পড়েছে মাত্র ২০ পয়সা থেকে ২৫ পয়সা। সবজি ব্যবসায়ী কামাল জানান, বাজারে চাহিদার তুলনায় লেবুর সরবরাহ বেশি। সেকারনে দাম পড়ে গেছে। মাস দেড়েক আগেও তিনি প্রতি হালি লেবু বিক্রি করেছেন ১০ থেকে ২০ টাকা দরে। কিন্তু বর্তমানে ৫ টাকা কেজি দরে লেবু বিক্রি করছেন। নাটোরের এক ক্রেতা মোতালেব ইসলাম জানান, দাম কম হওয়ায় তিনি ৫ টাকা দিয়ে এক কেজি লেবু কিনেছেন। তাছাড়াও ক্রেতা ইমরান জানালেন, গত শুক্রবারের হাটে তিনি মাত্র এক কাপ চায়ের দামে ২১ কেজি লেবু কিনেছেন।
লেবু চাষী সাবেক ইউপি সদস্য মাহাবুর রহমান জানান, তার নিজের দুই বিঘা জমিতে লেবু বাগান রয়েছে। এলাচি ও চায়না থ্রি জাতের লেবু চাষ করেছেন। বাগানে বিপুল পরিমানে লেবু ধরেছে। কিন্তু ক্রেতা নাই। বাইরে থেকেও তেমন ক্রেতা এ অঞ্চলে আসছেনা। ফলে গাছ থেকে উত্তোলন না করায় বাগানেই মাটিতে পড়ে পচে যাচ্ছে। লেবু ব্যবসায়ী নূরপুর মালঞ্চি গ্রামের মমতাজ উদ্দিন জানালেন, চলতি মওসুমে লেবু বিক্রি করে পরিবহন খরচই উঠছে না। উৎপাদন ও শ্রমিকের খরচ দিয়ে লোকসান গুনতে হচ্ছে। দ্রব্য মূল্যের উর্দ্ধগতিতে সবজিসহ প্রায় সব জিনিসের দামই বাড়ছে। কিন্তু লেবুর দাম দিন দিন কমে যাচ্ছে। ব্যবসায়ীরা মনে করেন, বাজার নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে বানিজ্যিকভাবে লেবু চাষে আগ্রহ হারাবে কৃষকরা। এব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোমরেজ আলী জানান, বানিজ্যিকভাবে অনেক কৃষক লেবু চাষ করেছেন। তাছাড়া বাগানের ছায়াতে কিংবা জমির আইল দিয়ে সাথি ফসল হিসেবেও কৃষকরা লেবু চাষ করছেন। চলতি মওসুমে উপজেলায় ২২৫ বিঘা জমিতে লেবু চাষ হয়েছে। বাজারে আমদানী বেশি হওয়ার কারনে লেবুর দাম বর্তমানে কিছুটা কম বলে জানিয়েছেন এই কর্মকর্তা।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *