নাটোরে সাংবাদিকের ওপর হামলার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার রাতে মোশারফ হোসেন (৫২) নামের ওই ব্যক্তিকে নাটোরের সিংড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল শনিবার বিকেলে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বাংলাদেশ কণ্ঠ পত্রিকার নাটোর প্রতিনিধি খন্দকার মাহাবুব (৫০) তাঁর হাতে মারধরের শিকার হন বলে অভিযোগ ওঠে। গ্রেপ্তার মোশারফ হোসেন সদর উপজেলার বাকশোর গ্রামের বাসিন্দা।পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাংলাদেশ কণ্ঠ পত্রিকার নাটোর প্রতিনিধি খন্দকার মাহাবুব ও বাংলা টিভির নাটোর প্রতিনিধি মেহেদী বাবু গতকাল বেলা সোয়া তিনটার দিকে বাকশোর গ্রামে নির্মাণাধীন সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পর খোঁজখবর নিতে যান। এ সময় মোশারফ হোসেন তাঁদের বলেন যে আশ্রয়ণ প্রকল্পের সরকারি জমিটি তাঁর দখলে ছিল। কিন্তু সরকারের কিছু কর্মকর্তা ও সাংবাদিক যোগসাজশ করে জমিটি দখল করেছেন। এ সময় তিনি সাংবাদিক ও কর্মকর্তাদের উদ্দেশে গালিগালাজ শুরু করেন। সাংবাদিক খন্দকার মাহাবুব তাঁকে থামতে বললে মোশারফ নিজের হাতে থাকা শ্যালো মেশিনের লোহার হ্যান্ডেল দিয়ে মাহাবুবের মাথায় আঘাত করেন। এতে তাঁর মাথা ফেটে রক্ত বের হয়। আবার আঘাত করতে গেলে উপস্থিত সাংবাদিক মেহেদী বাবু ও স্থানীয় লোকজন বাধা দেন।এ ঘটনার পরপরই খন্দকার মাহাবুবকে নাটোর সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। মাথায় কয়েকটি সেলাই দেওয়ার পর মাহাবুবকে ৭২ ঘণ্টার জন্য পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ফাহমিদা লস্কর বলেন, সাংবাদিক মাহাবুবের মাথায় ভোঁতা অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। আঘাতটি কিছুটা গভীর। তাই তাঁকে ৭২ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।ঘটনার পরপরই পুলিশের একাধিক দল অভিযুক্ত মোশারফ হোসেনকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান শুরু করে। এরপর গোয়েন্দা পুলিশ রাত ৯টার দিকে তাঁকে সিংড়া বাসস্ট্যান্ড থেকে গ্রেপ্তার করে। রাতেই সদর থানায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয়। আজ রোববার দুপুরে মোশারফকে আদালতে হাজির করা হবে।ঘটনার সময় উপস্থিত সাংবাদিক মেহেদী বাবু জানান, আশ্রয়ণ প্রকল্প শুরু হওয়ার আগে অবৈধভাবে দখল করে ওই জমিতে হামলাকারী মোশারফ হোসেন থাকতেন। সরকারি তৎপরতায় তাঁকে সেখান থেকে সরানো হয়। অথচ তাঁর ধারণা, তাঁকে সেখান থেকে সরানোর পেছনে সাংবাদিকদের ভূমিকা আছে। এই আক্রোশ থেকেই তিনি দুই সাংবাদিকের উদ্দেশে গালিগালাজ শুরু করেন। প্রতিবাদ করলে তিনি খন্দকার মাহাবুবকে হত্যার চেষ্টা করেন।নাটোর ইউনাইটেড প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব হোসেন বলেন, ‘আহত সাংবাদিক আমাদের প্রেসক্লাবের অর্থ সম্পাদক। তাঁকে হত্যার চেষ্টা করে হামলাকারী ঔদ্ধত্য দেখিয়েছেন। আমরা হামলাকারীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেন, ঘটনার খবর পাওয়ার পরপরই পুলিশ হামলাকারীকে গ্রেপ্তারে তৎপরতা শুরু করে। গত রাতেই আসামি মোশারফ হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শিগগিরই তদন্ত করে প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হবে।