নাটোরে ছাত্রলীগ নেতা জীবন হত্যাকারীর সর্বচ্চো শাস্তি দাবী এমপি শিমুলের
নিজস্ব প্রতিবেদক :
নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলা ছাত্রলীগ যুগ্ম সম্পাদক জামিউল আলীম জীবন হত্যার সাথে জড়িত উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ ও তারসহযোগিদের সর্বচ্চো শাস্তির দাবী জানিয়েছেন নাটোর-২ (সদর ও নলডাঙ্গা) আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল।
একই সঙ্গে উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদের নামে নানা অভিযোগ এনে অবিলম্বে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনাসহ তাকে আশ্রয় দাতাদের বিচারের দাবী জানিয়েছেন।
শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে রামশারকাজীপুর গ্রামে নিহত জীবনের বাড়িতে শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানানো শেষে সাংবাদিকদের এক ব্রিফিংয়ে তিনি এই দাবীর কথা বলেন। এসময় উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুস শুকুরসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী, জনপ্রতিনিধিগন উপস্থিত ছিলেন।
শফিকুল ইসলাম শিমুল বলেন, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ একজন মামলাবাজ, চরিত্রহীন, লম্পট ও একজন খুনি। তার বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে জমি দখল, শালিসের নামে অর্থ হাতিয়ে নেয়াসহ সংগঠন বিরোধী নানা অপকর্ম এবং সন্ত্রাসী কার্যক্রমে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। নাটোরের অবিসংবাদিত নেতা বাবু শংকর গোবিন্ধ চৌধুরীর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রচারনা কাজে নিয়োজিত মাইক ভাংচুর করেছিলো আসাদ।
ছাত্র জীবনে ইসলামী ছাত্র শিবির করতেন উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, ছাত্রশিবিরের রাজনীতি শেষে জাতীয় পার্টির রাজনীতি করার পর আওয়ামীলীগে এসেছে। এই আসাদ আওয়ামীলীগে আসার পর থেকে দলের মধ্যে বিবেধ সৃষ্টি সহ নেতাকর্মীদের মধ্যে কোন্দল তৈরী করে সংগঠনের অনেক ক্ষতি করেছে। বিশেষ করে গত ২০ ফেব্রুয়ারী জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলনের পর থেকে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। একের পর এক মামলা, হামলাসহ অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে আসাদ।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ছাত্রলীগ নেতা জামিউল আলিম জীবনকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যার জন্যই মারপিট করেছে খুনি আসাদ ও তারই ভাইয়েরা। তাকে রক্ষার জন্য একটি মহল ওঠে-পড়ে লেগেছে। গত ২১ সেপ্টেম্বর জীবনের মৃত্যু হলেও নাটক করে তিন ধরে মেডিকেলে রাখা হয়েছে। কার ইন্ধনে, কি উদ্দেশ্যে এই নাটক সাজানো হলো তা জনগণ জানতে চায়। কারা পেছন দিক থেকে এই ধরনের নাটক সাজিয়ে খুনি আসাদকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে তা খুজে বের করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামীলীগ কেন্দ্রীয় নেতাদের জানানো হবে। তবে তিনি খুনি আসাদকে সহায়তা করার অভিযোগ তুললেন জেলা আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধে।
শফিকুল ইসলাম শিমুল জেলা আওয়ামীলীগ ও জেলা ছাত্রলীগের সমালোচনা করে বলেন, ছাত্রলীগ নেতা জীবন হত্যাকান্ড ঘটলো অথচ জেলা ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা কোন শোক বার্তা দিলো না, এমনকি জেলা আওয়ামীলীগও নিরব ভুমিকা পালন করছে। উল্টো তারা ঢাকায় গিয়েছে। তিনি বলেন, যারা খুনি আসাদকে সহায়তা করছে তাদেও মুখোশ উন্মোচন হবে। আসাদ যাতে নাটোর ছেড়ে পালাতে না পারে সেজন্য সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।
তিনি আরো বলেন, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদকের দায়িত্ব পালনকালে গত ৮ বছরে নাটোরে কোন সন্ত্রাস, চাঁদাবাজী ও কোন মানুষকে হয়রানী করতে দেয়া হয়নি। অথচ জেলা আওয়ামীলীগ সম্মেলনের পর থেকে দখলবাজ, সন্ত্রাসী কার্যকলাপ সংঘঠিত হচ্ছে। যারা মানুষ হত্যা করে, চাঁদাবাজি করে, অর্থ লুটপাট ও দখলবাজি করে, তারা কখনও বঙ্গবন্ধুর সৈনিক হতে পারে না। তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদের সর্বচ্চো শাস্তি দাবী করেন এবং জীবনের পরিবারকে খুনের বিচার কাজে সহায়তার আশ^াস দেন।
এরআগে সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল আমতলী বাজাওে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জীবনের বাড়িতে যান। সেখানে পরিবারের লোকজনের সাথে দেখা করে শান্তনা দেন। এসময় নিহত জীবনের তিন মাস বয়সের শিশু সন্তান রুপমকে কোলে নিয়ে কেঁদে ফেলেন তিনি। একদিকে স্বজনদের কান্না, অপরদিকে দলের নেতাকর্মীদের কান্নায় আশ পাশের পরিবেশ ভারি হয়ে ওঠে। এসময় আগত নেতাকর্মীরা চেয়ারম্যান আসাদকে দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবীতে সোচ্চা হয়ে উঠেন এবং বিক্ষোভ প্রর্দশন করেন।