টাকা ছাড়া সেবা মেলে না নাটোরে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে

 

 

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

টাকা ছাড়া সেবা মেলে না নাটোরে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে,নাটোর শহরের মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে (ম্যাটারনিটি হাসপাতাল) টাকা ছাড়া প্রসবকালীন কোনও সেবা মেলে না রোগীদের। এছাড়া ডেলিভারি রোগীদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। দাবি অনুযায়ী টাকা দেওয়া না হলে রোগীর স্বজনদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করা হয়। এতে নিয়মিত হয়রানির শিকার হচ্ছেন সেবা নিতে আসা রোগী ও তার স্বজনরা।বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার কথা থাকলেও  এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর সমলোচনার ঝড় উঠে । নাটোর সদর উপজেলার হয়বতপুর গ্রামের দিনমজুর সলেমান আলীর স্ত্রী মিতু বেগম (২২) প্রসব যন্ত্রণা শুরু হলে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে নিয়ে আসেন তার স্বজনরা। হাসপাতালে আসার পর মিতু স্বাভাবিকভাবে (নরমাল ডেলিভারি) সন্তান প্রসব করেন। কিন্তু ভিজিটর ইতি রানী ওই রোগীর কাছ থেকে ৩ হাজার টাকা দাবি করেন রোগীর চাচী মনোয়ারা বেগম চায়না বলেন, নরমাল ডেলিভারির ক্ষেত্রে কেন এত টাকা দিতে হবে প্রশ্ন করলে ভিজিটর ইতি রানী তাদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন এবং টাকা না দেওয়ায় প্রয়োজনীয় সেবা বঞ্চিত করেন ।পরে বাধ্য হয়ে তারা ২ হাজার টাকা দেয় ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,।দিতে গড়িমসি শুরু করেন।রোগীর লোকজন স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের বিষয়টি জানালে তারা তাৎক্ষণিক হাসপাতালে এসে টাকা চাওয়ার কারণ জানতে চান। তখন ভিজিটর ইতি রানী বলেন, আমরা একটানা ১৮ ঘন্টা ডিউটি করি । সুতা ও ওষুধপত্র বাবদ রোগীর কাছে টাকা চাওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হয়নি।ভালোভাবে বাচ্চা প্রসব করলে মিষ্টি খাওয়ার জন্য কিছু টাকা নেয় ।গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে রোগীর কাছ থেকে নেওয়া ২ হাজার টাকার মধ্যে ১হাজার ৫ শ’টাকা ফেরত দেয় ।গণমাধ্যমকর্মী উপস্থিতে  বিষয়টি মীমাংসা করলেও রোগীদের ৫শ টাকা দিতে হয়। ভিজিটর ইতিরানীর বিরুদ্ধে জোরপূর্বক টাকা আদায়ের অভিযোগ নতুন নয় ।স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী মামুন খান ও মারুফ হোসেন বলেন, রোগীর কাছ থেকে ২ হাজার টাকা আদায় করা হয় । প্রথমে ৫০০ টাকা দিলে রোগী স্বজনদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করা হয় এবং রোগীকে চিকিৎসা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করে। পরে ইতিরানী তাদের সামনে রোগীর স্বজনদের টাকা ফেরত দেয় ।নাটোর শহরের মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে (ম্যাটারনিটি হাসপাতাল) টাকা ছাড়া প্রসবকালীন কোনও সেবা মেলে না। এখানে দীর্ঘদিন ধরে কর্মরত ভিজিটর ইতিরানীর নেতৃত্বে গড়ে উঠা নার্স ও কর্মচারী সিন্ডিকেট নরমাল ডেলিভারীতে বাচ্চা হলেও ২ থেকে ৩ হাজার টাকা দাবী করে। রোগীর স্বজনরা কম দিলে তাদের সাথে অশোভন আচরণ করেন।এছারা আরো অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ।এ সময় রোগীর লোকজন তার কথার প্রতিবাদ করলে উভয়পক্ষের মধ্যে ঝগড়া লাগে। পরে অথচ এ হাসপাতালে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য সেবা দেওয়ার কথা। এ ব্যাপারে ভিজিটর ইতি রানী বলেন, বাচ্চা ভালোভাবে প্রসব হলে রোগীর স্বজনরা খুশি হয়ে বখশিস হিসেবে যা দেয় তা নিয়ে থাকি । এক্ষেত্রে মিষ্টি খাওয়ার জন্য ১ থেকে ২ হাজার টাকা দাবী বা অশোভন আচরণের অভিযোগ সঠিক নয় ।নাটোর পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের উপ-পরিচালক মাহফুজা খানম বলেন, ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি দেখার পর ইতিরানীসহ সবাইকে আমি সর্তক করেছি। এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ওই ভিজিটরের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।এ ব্যাপারে হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. ইয়াদুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার মন্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *