ইউক্রেনে রুশ অভিযানের সাড়ে তিন মাস পেরিয়েছে। অভিযানে ইউক্রেনের যেমন ক্ষতি হচ্ছে, তেমনি পাল্লা দিয়ে ক্ষতি বাড়ছে রাশিয়ারও। ইউক্রেন বলছে, ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর তাদের ১০ হাজার সেনা নিহত হয়েছেন। প্রতিদিন প্রাণ হারাচ্ছেন গড়ে ১০০ সেনা। আর আহত হচ্ছেন কয়েক শ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য উল্লেখ করে ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা ওলেক্সি অ্যারেস্টোভিচ দাবি করেন, রাশিয়ার ক্ষতি তিন গুণ বেশি। তবে যুক্তরাজ্যের গোয়েন্দা তথ্য বলছে, নিহত রুশ সেনার সংখ্যা ১৫ হাজারের মতো। ১৯৭৯ থেকে ১৯৮৯। এই এক দশকের আফগানিস্তান যুদ্ধে সাবেক সোভিয়েত বাহিনীর যত সেনা নিহত হয়েছিলেন, ইউক্রেনে মাত্র সাড়ে তিন মাসেই নিহত রুশ সেনার সংখ্যা তা ছাড়িয়ে গেছে। আফগানিস্তান যুদ্ধে নিহত হন ১৫ হাজারের কাছাকাছি সোভিয়েত সেনা। এখন ইউক্রেনে নিজেদের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে গত ২৫ মার্চের পর আর কোনো আনুষ্ঠানিক তথ্য প্রকাশ করেনি রুশ কর্তৃপক্ষ। ওই সময় মস্কো দাবি করেছিল, যুদ্ধে তাদের ১ হাজার ৩৫১ সেনাসদস্য নিহত হয়েছেন। এ তো গেল দুই পক্ষের সেনাসদস্য নিহত হওয়ার একটা তুলনামূলক পরিসংখ্যান। এর বাইরে ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধে এখন পর্যন্ত রাশিয়ার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন করা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। এরই মধ্যে চলমান যুদ্ধে রাশিয়ার আধুনিক অস্ত্রভান্ডার ক্রমে ফুরিয়ে আসার খবর পাওয়া যাচ্ছে। যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ও সম্প্রতি এমন ইঙ্গিত দিয়েছে।বড় শহর দখলের জন্য যে পরিমাণ যুদ্ধ সরঞ্জাম প্রয়োজন, তা-ও আমাদের দেওয়া হয়নি। আমরা হেলিকপ্টারের সহায়তা ছাড়াই সারি বেঁধে এগিয়ে যাচ্ছিলাম। মনে হচ্ছিল, আমরা কুচকাওয়াজ করতে করতে যাচ্ছি। —সের্গেই (ছদ্মনাম), রাশিয়ার সেনাসদস্য ইউক্রেন অভিযানে যুদ্ধজাহাজ ধ্বংসকারী ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী সমরশক্তি রাশিয়া। তবে সেটা জলভাগে নয়, স্থলভাগে। স্থলভাগে এই যুদ্ধাস্ত্রের ব্যবহারে অবাক বিশ্লেষকদের অনেকে। যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মতে, কোনো যুদ্ধে সচরাচর এমন দেখা যায় না। ভূভাগে এমন অস্ত্র ব্যবহারের ফলে হতাহতের সংখ্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ বেড়ে যেতে পারে। রাশিয়ার হাতে আধুনিক অস্ত্রের পরিমাণ কমে আসায় দেশটি জলপথে ব্যবহারের অস্ত্র স্থলপথের যুদ্ধে ব্যবহার করে থাকতে পারে।